শরীর উঠতি পড়তিতে আছে। এখন রাত ১০–২০।
শ্রমিষ্ঠা নারীদের শ্রদ্ধা জানিয়ে শেষ লিখি

আজ বিশ্ব চা দিবসঃ চা- শ্রমিষ্ঠাদের কথা

তোমার হাতে চায়ের কাপ
তমাল সাহা

তোমার হাতে চায়ের কাপ
সাদা প্লেটের ওপর সুন্দর সাজানো
ধবধবে কাপটি তোমাকে
আরও বিমূর্ত করে তুলেছে।

বাষ্প ধোঁয়া উঠছে, ফ্লেভারে পূর্ণ সবুজ চা
গন্ধ ভাসছে ড্রয়িং রুমের বাতাসে।
এই চা তুমি কত গুছিয়ে বানিয়েছ
এমনকি আরেকটি কাপ হাতে
বসে পড়েছ ড্রইংরুমে আমার পাশে।
সকালের বাতাস উষ্ণ চায়ের কাপ দেখে হাসে।

এইসব সুখের গল্প ওরা জানে?
ওরা বেড -টি খায়?
না মশগুল থাকে কখন যাবে চা-বাগানে?
আশ্চর্য নারীরা সব চা বাগানের
জংলি কাপড় পরনে
চায়ের টুকরি পেছনে মাথায়
খুব কৌশলী হাতে ঝোলানো।
চা বাগানের আঁকাবাঁকা পথে হাঁটে
দুটি পাতা একটি কুঁড়ি বাছাই করে দ্রুত
নমনীয় হাতে তোলে।
সারি সারি নারী শরীরে তাদের বনজ কারুকাজ।
কপালে বিন্দু বিন্দু ঘামের ভাঁজ।

টুকরি বোঝাই হলে কত মজুরি পায়?
চা বস্তি মহল্লা ঘুরে তার হদিশ পাওয়া যায়।
অপুষ্টিতে ভরে গেছে ঘর
মহল্লায় নোংরা নালা নর্দমা শৌচালয়!
কোথায় সেইসব অপূর্ব কথা
বাতাসে ভেসে যায় স্বাস্থ্য নিরাময়।

স্বামীরা কতসব বুড়ো হয়ে গেছে
অপুষ্টিতে ভুগে মরে
শুয়ে আছে অন্ধকার ঘরের কোণে।
মাথার উপরে খোলা চালের ফাঁকে
নক্ষত্রের আগুন গোনে।

চা পাতা তুলতে তুলতে দিন যায়
তাহলে দুপুরে কি খায়?
চাল ভাজা, মুড়ি,চা কুঁড়ির সঙ্গে পেঁয়াজ, রসুন মরিচ দিয়ে তৈরি পাতি চাটনি বা পাতি চোখা–
যাপিত জীবনের এই পরিপূর্ণ আয়োজন
তরাইয়ে ডুয়ার্সের বাতাসে উড়ে যায়।

পাহাড়ের গায়ে চা বাগানের ঢাল
তোমার আমার হাতে
চায়ের কাপ উষ্ণতা ছড়ায়…