আজ এই বিদেশি মেয়েটির জন্মদিন, আমাদের দেশে যাঁর পুনর্জন্ম হয়েছিল নারী ও ভারত মুক্তির আন্দোলনে।তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা
তোমার জন্য দুটি লেখা
তমাল সাহা
এক)
একটি মেয়ে
একটি মেয়ে ছিল, মেয়ের মত মেয়ে।
কেন যে ঢুকে পড়েছিল সে এই ভারতীয় গাঁয়ে!
সাগর পেরিয়ে এল সে এই সুতানুটি কলকাতা।
এখানেই শুরু তার জীবনের হালখাতা।
খাতা খুলে দেখে সবই সাদা পাতা,
অসহায় নারীদের মুখ।
বুঝে ফেলে
নারীদের শিক্ষা চেতনার অভাব
এখানে লুকিয়ে নারীদের মাথানিচুর অসুখ।
বাগবাজারে খুলে ফেলে মেয়েদের স্কুল,
সেখানে ফুটতে থাকে ক্রমশ—
শেফালী, জুঁই,মালতি,বকুল।
দেশ পরাধীন,মুক্ত কর তাকে—
মেয়েরাও করবে রাজনীতি।
পুরুষের পাশে দাঁড়ালে নারীরা
সে অন্য এক গতি।
সেও ঢুকে পড়ে ভারতীয় রাজনীতির আঙিনায়—
বিপ্লব! বিপ্লব! তার মাথা কুরে খায়।
অস্ত্রবাদী অরবিন্দরা তাকে জানে।
দেশের মুক্তি তো সশস্ত্র বিপ্লবীরাই আনে।
ভালোবেসেছিল সে ভারতীয় শিল্পকলা
অবনীন্দ্রনাথ,নন্দলাল বসুর সঙ্গে
তার পথচলা।
এ মেয়ে যে সে মেয়ে নয়,
বিবেকানন্দ তাকে চেনে।
বিদেশি মেয়েটি রেখেছিল পা তারই আহ্বানে—
ভারত মুক্তির জয়গানে।
উৎসর্গ করেছে সে নিজেকে,
নিবেদন করেছে নিজের মনন শ্রম ঘাম।
ছিল মার্গারেট,হয়ে গেল তার
ভগিনী নিবেদিতা নাম।
দুই)
ওগো বিদেশিনী!
ভারতকে আমরা আর কতো ভালোবাসি?
সাগর পেরিয়ে ছুটে এসেছিল সে
দুর্দান্ত তার হাসি।
প্রাণের প্রাবল্যে ধরেছিল দুটি অস্ত্র
অসি আর মসী।
ভালোবাসার জাত-ধর্ম নেই,
কেবা স্বদেশি,কেবা প্রবাসী!
ছিল মার্গারেট হয়ে গেল নিবেদিতা,
মনে আছে?
বিদেশিনী হয়েও ভগিনী হয়ে গেছে।
ভারতের লাগি সমর্পিত প্রাণ
গেয়েছিল বিপ্লবের জয়গান।
আজ আবার স্বদেশি-বিদেশি লড়াই
ডিটেনশন ক্যাম্পের বিরুদ্ধে যুদ্ধ।
কী করে নিকট করতে হয় মানুষকে
শিখে নিই তার কাছে।
ময়দানে এসো,থেকো না ঘরে অবরুদ্ধ।