এবার ট্রেনও ক্ষমতা দেখায়।
রে পরিযায়ী মজুর! মৃত্যু ছাড়া তোর পথ কোথায়?

ট্রেন পরিযায়ী মজুর খায়
তমাল সাহা

পরিযায়ী মানে
আমি কি জানি ছাই!
বাবা শিখিয়েছিল
পাখিরা পরিযায়ী হয়।
পরিযায়ী শব্দে
আমার এখন ভীষণ ভয়।

পাখি আকাশ পেরিয়ে চলে আসে
দেশ থেকে বিভুঁইয়ে।
মুক্ত বিহঙ্গ, স্বাধীন তার ডানা।
বিশাল পৃথিবী জুড়ে তার আনাগোনা।

মজুর পরিযায়ী হয় কীভাবে
সে তো দেশ ছেড়ে আসে না বিদেশে?
নিজের দেশেই ঘোরে ফেরে।
আকাশ তো পেরোয় না
উড়োজাহাজ করে?

বাবা নেই চলে গেছে আকাশের দিকে।
এমন ভুল কেন
শিখিয়ে দিয়ে গেল আমাকে?
ভুল শেখানোর কথা তো নয়
বাবা আমার ছিলেন মাস্টারমশাই।
এত বড় ভুল করলন বাবা!
আমি এখন মানুষকে
কী করে বোঝাই?

পরিযায়ী মজুরও হয়
পরিযায়ী হয় শ্রমিক!
পায় না খেতে
উড়াল দেয় এদিক সেদিক।
আমরা শুধু তাকিয়ে দেখি
আমরা খুবই অমায়িক।

লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী মানুষ
সড়ক ধরে হাঁটে
গাড়ি চাপা পড়ে।
লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী মানুষ
রেললাইন ধরে হাঁটে
তারা ভারতে থাকে।
তারা ভারতেই হাঁটে
তবু তারা পরিযায়ী ।
হাঁটে আর হাঁটে,
পায়ে ফোস্কা পড়ে
তারা দুপায়ী।

এবার পরিযায়ী মজুর
পেটে নেই দানা,নেই পানি
ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত, অবসন্ন
দেহ আর কতদৃর টানতে পারে
শুয়ে পড়ে লৌহবর্ত্মের উপরে
ট্রেনের চাকায় পড়ে চাপা
দেহ পড়ে রইলো লাইনের ধারে।

ভারতবর্ষ নিথর নীরব নিশ্চুপ!
মোমছাল গন্ধক পাথরকুচি
পাটের দড়ি নেই, নেই পেরেক।
রাজনৈতিক দল বহু আছে
সব শালা ভেক।

দ্রুতগামী ট্রেনও মজুরের
মাংস চায়
মজুর তবে কোথায় যায়?