অবতক খবর :: মোথাবাড়ি :: গোটা জেলায় নজির তৈরি করতে চলেছে মোথবাড়ি থানার রাজনগর গ্রাম পঞ্চায়েত। ৫ আসন বিশিষ্ট এই পঞ্চায়েতে কোয়ারেন্টিন সেন্টারগুলেত নজরদারিতে রয়েছে এলাকাবাসীরা। দফায় দফায় নজরদারি চালাচ্ছেন তাঁরা। গ্রামবাসীরা নিজেরা যেমন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন, তেমনই নিজেরা শ্রম দিচ্ছেন পরিযায়ী শ্রমিকদের পেছেনেও। গ্রামবাসীরা পালা করে কোয়ারেন্টন সেন্টারগুলিতে নজরদারিতে রয়েছেন। কোনও সংশোধনাগারের থেকেও কড়া অনুশাসনে রাখার চেষ্টা চালাচ্ছেন ভিন রাজ্য আসা শ্রমিকদের। এমনকী পরিবারের লোকেরা খাবার নিয়ে এলেও সামাজিক দূরত্ব মেনে খাবার দিয়েই তাঁদের পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পরিবারের সঙ্গে কথা বলা কয়েক মিনিট, তাও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে।

মোথবাড়ি থানার অন্তর্গত গঙ্গার তিরবর্তী রাজনগর গ্রাম পঞ্চায়েতে। এখানে মোট ৬টি কোয়ারেন্টিন সেন্টারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জানা গেছে, ৫টি কোয়ারেন্টিন সেন্টারে পরিযায়ী শ্রমিকেরা রয়েছেন। এখনও একটি ফাঁকা রাখা হয়েছে। এই ৫টির মধ্যে রাজনগর ফ্লাড সেন্টারে রয়েছেন ৩২, নয়াগ্রাম প্রাথমিক ১৭ , নবকান্তটোলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০, নয়াগ্রাম বৈষ্ণবনগর এসএসকে-তে ২০ এবং নয়াগ্রাম ক্লাব এসএসকে-তে রয়েছেন ৭ জন এবং মাঠে তিনজন তাবু করে করেন্টাইনে রয়েছেন । নয়াগ্রাম মডেল এসএসকে এখন ফাঁকা।
জানা গেছে, এখানে ৩ বেলা করে খাবার দেওয়া হচ্ছে। পরিবারের লোকেরা এসে খাবার দিয়ে যাচ্ছেন। কখনও পঞ্চায়েত থেকে খাবার দেওয়া হচ্ছে। গ্রামবাসীদের নিয়ে ৩০ জনের একটি কমিটি গড়া হয়েছে কোয়ারেন্টিন সেন্টারগুলি দেখভালের জন্য। কমিটির সদস্যরা দফায় দফায় নজরদারিতে রয়েছেন। এদিকে মন্দির ও মসজিদের মাইকে লকডাউন নিয়ে এলাকাবাসীকে সচেতন করা হচ্ছে। পাশাপাশি কোয়ারেন্টিন সেন্টারগুলির আশেপাশে জমায়েত না করার অনুরোধ করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত প্রধান ধনীরানী মন্ডল ও স্বামী বিনয় মন্ডল বলেন,‘করোনা রুখতে তৎপর এখানকার বাসিন্দারা। কোয়ারেন্টিন সেন্টারগুলিতে বাড়ি থেকে খাবার দিয়ে গেলেও সবার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। এখানে বেশির ভাগ সব গরির। তাই মাঝে মধ্যে পঞ্চায়েত থেকে খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’ অন্যদিকে, কোয়ারেন্টিন সেন্টারে নিয়ে অভিযোগ নিয়ে বিক্ষোভ দেখান পরিযায়ী শ্রমিকেরা। রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান সোমবার দুপুরে। ঘটনাটি মোথাবাড়ি থানার বাবলা কমলপুরে।
পরিযায়ী শ্রমিকদের অভিযোগ, তারা কয়েকদিন ধরে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় থাকলেও সেখানে কোনও বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা নেই। এই গরমে সেখানে থাকাটা কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাঁদের যেমন হচ্ছে না কোনও চিকিৎসা, হচ্ছে না কোনও লালারস পরীক্ষা। বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় কয়েকশো পরিযায়ী শ্রমিকেরা। তারা বাঁশের মাচা বেঁধে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। এই ঘটনায় গোটা এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় ছুটে আসেন মোথাবাড়ি থানার ওসি বিটুল পাল। পঞ্চায়েত প্রধান সাহানারা খাতুন বিক্ষোভকারীদের দাবি পূরণের আশ্বাস দেওয়ার পর অবরোধ ওঠে।









