চেয়ার
তমাল সাহা

চেয়ারে বসার লোক যারা,
তারা চেয়ারেই বসে ছিল।
এদিকে চেয়ার কারখানা
দাউ দাউ জ্বলে গেল।

চেয়ার যারা বানায়
তারা কি চেয়ারে বসে?
তারা আগুনে পুড়ে গেলে
কার কি যায় আসে?

পঁচিশটি দমকল এলো,
এলো দোতলা সমান উঁচু মই।
পাঁচজন শ্রমিক নিখোঁজ
পল্টু দুয়ারি, সঞ্জীব পারিয়া,
সুবোধ, মুন্না, নিত্যানন্দ রায়।
গরম বাতাস প্রশ্ন করে
তারা গেল কোথায়?

দমকল মন্ত্রী অতি শান্তশিষ্ট,
উত্তেজহীন নির্লিপ্ত তার ভাব।
হাল্কা চালে বলে দেন,
কারখানায় অগ্নি নির্বাপণের ব্যবস্থা, যন্ত্রপাতির ছিল অভাব।

মানুষ মরলে মরুক,
তার নেই কোনো চাপ।
দাহ‍্যবস্তু পেলে আগুন খাবে
এটাই তো তার ধর্ম—
লেলিহান শিখা ছড়াবে উত্তাপ।

পোড়াছাই স্তূপীকৃত হয়ে আছে।
তার ভেতর মুখ লুকিয়ে আছে
আচ্ছে দিন—
পাশে পড়ে আছে পোড়াভাতের থালা,
মজুরের আধখাওয়া টিফিন।

আগুন তো আগুনই—
তার তো নরমাংস প্রিয় চিরকাল।
মানুষকেই সে করবে গ্রাস।
দমকল বা শ্রমমন্ত্রীর তাতে কি?
তারা দাঁড়িয়ে আছে,
দেহ উদ্ধার হলে শ্মশানযাত্রায়
তাদের হাতে রজনীগন্ধার মালা
পরবে পাঁচটি মেহনতি লাশ।

বাতাসে উঠবে আর্ত চিৎকার
স্বামী গেল, পুত্র গেল কার?

চেয়ার! চেয়ার!চেয়ার!
আসুন মন্ত্রীমশাই!
ঐ দেখুন খুবই সুন্দর মজবুত
কোন চেয়ারটি পছন্দ আপনার?

মরে মরুক চেয়ারের কামগার!