অবতক খবর,১৯ জুলাই,মলয় দে নদীয়া :-বাজার ভালো না ! চলতি ছয় মাসে আট ন বার চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে গেলো হাতেনাতে। তবে শান্তিপুরের আতিথেয়তা আলাদা , হাতেনাতে ধরা পড়ার পর জিনিসপত্র ফেরত দেওয়ার জন্য দু চড় চাপড় খেলেও পরবর্তীতে চোরকে অতিথি আপ্যায়ন রীতিমতো বেশ কয়েকবার চা বিস্কুট, একতারা বিডি নতুন জামা এ সমস্ত বাড়তি পাওনা।

গতকাল মধ্যরাতে লাস্ট ট্রেনে নৈহাটি 30 নম্বর রেল কোয়াটার থেকে আগত প্রবীর রায় নামে পরিচয় দেওয়া এক যুবক স্বীকার করে, প্রথমে সে বাতিল ভাঙ্গা প্লাস্টিক লোহা সংসারে ব্যবহৃত পরিত্যক্ত জিনিসপত্র কিনে ভাঙরি গোলায় তা বিক্রি করতেন, কিন্তু হেরোইনের নেশার খরচ জোগাড় করতে বারবার ধরা পড়ার পরেও আবারও চুরি করতে বেরোতে হয়।

শেষবারের জন্য নিজের এলাকাতেই কুড়ি কেজি লোহা তাও ধরা পড়ার পর উত্তম মাধ্যম খেয়ে খালি হাতে ফিরতে হয়েছিলো বাড়িতে। এরপর স্থির করেছিলো, এলাকাতে নয় যেতে হবে অনেক দূরে তাই শান্তিপুর স্টেশনে। রেললাইন ধরে কিছুটা এগুলোর পর স্টেডিয়ামের পাশ থেকে সোজা পথ ধরে আসা, বেশ কিছু বাড়িতে শক্তপোক্ত তালা না থাকায় ঘরে ঢুকে পড়া এবং মোবাইল টাকা পয়সা তবে অন্ধকারে দেখতে না পেয়ে ভুল করে আধার কার্ড সহ বেশ কিছু কাগজপত্রও নেওয়া হয়ে গিয়েছিলো।

চুরির পর গৃহস্থ বাড়ির দরজায় মলত্যাগ। কুসংস্কার অনুযায়ী এ কাজ করলে নাকি ধরা পড়ার সম্ভাবনা থাকে খুব কম, কিন্তু এক্ষেত্রে শেষ রক্ষা হলো না।

নদীয়ার শান্তিপুর পৌর স্টেডিয়াম রোডের পাশে বিদ্যাসাগর পল্লীতে শ্যামলী দাস ,সুমন বিশ্বাসদের মতন প্রান্তিক পরিবারের হাড়ভাঙ্গা খাটুনির সামান্য উপার্জনের নগদ অর্থ মোবাইল, রুপোর পায়ের তোড়া চুরি করার সবকিছু ফিরিয়ে দিতে হলো হাতে রাতে ধরে ফেলান পরে । রাত প্রায় তিনটা থেকে এলাকাবাসীরা স্টেডিয়ামের সামনে একটি ইলেকট্রিক পোলে বেধে জিজ্ঞাসাবাদ চালায়। খবর দেওয়া হয় শান্তিপুর থানার পুলিশকে এরপর ভোরে তাদের হাতে তুলে দেয় এলাকাবাসী।

তবে এক্ষেত্রেও চুরি যাওয়া সমস্ত জিনিসপত্র ফেরত পেয়ে কোন লিখিত অভিযোগ না হওয়ার কারণে হয়তো তাকে ছেড়ে দিতে হবে পরবর্তীতে তবে এ প্রসঙ্গে অনেকেই মতামত প্রকাশ করে থাকেন তাহলে পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে লাভ কি ? কিন্তু সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না থাকলে পুলিশেরও যে কিছু করার থাকে না, তা বোঝা গেল আগত সাব ইন্সপেক্টরের কথায়।
তবে শান্তিপুরের আতিথেয়তা নিয়ে নানান বিরূপ মতবাদ প্রচলিত থাকলেও, দীর্ঘক্ষণ চোরের সাথে সময় কাটানোর ফলে এলাকাবাসীরা তাকে আমন্ত্রণ জানায় এই অপকর্ম ছেড়ে সুস্থভাবে দিনের আলোতে বেড়াতে আসার জন্য।