অবতক খবর,২১ জানুয়ারি: ৭০-এর দশকের মধ্যভাগ থেকে এই অঞ্চলের একজন ব্যবসায়ী যিনি পর্যায়ক্রমে ব্যবসায়ী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে নিজেকে গড়ে তুলেছিলেন, ব্যবসায়ী আন্দোলনের একজন বিশিষ্ট নেতা এবং প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত হয়েছিলেন, তিনি শান্তিরঞ্জন দাস। তিনি আজ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হলেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।
শারীরিক অসুস্থতা জনিত কারণে তাঁকে চিকিৎসার জন্য কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত পথিমধ্যে অবস্থা আরো গুরুতর হওয়ায় ব্যারাকপুর গ্যালাক্সি হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

শান্তিরঞ্জন দাস এই অঞ্চলে একটি সুপরিচিত নাম। এই অঞ্চলের ব্যবসায়ী আন্দোলন যে গড়ে উঠেছিল তাতে তিনি উল্লেখযোগ্য নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এই আন্দোলনের সঙ্গে উল্লেখযোগ্য ভাবে জড়িত ছিলেন দিদার সিং কলসি বদ্রি প্রসাদ আগরওয়াল, পরেশ মোদক ও অন্যান্যরা। কাঁচরাপাড়ায় তাদের নেতৃত্বেই গড়ে উঠেছিল প্রথম ব্যবসায়িক সংগঠন। সে সময়ে নিয়মিত লোডশেডিংয়ের কারণে ব্যবসায়ীদের অসুবিধা হচ্ছিল। এর প্রতিবাদে তারা আন্দোলন সংগঠিত করেছিলেন।

প্রকৃতপক্ষে শান্তিরঞ্জন দাস ছিলেন একজন শ্রমজীবী মানুষ। তিনি শ্রমজীবী মানুষের আন্দোলনের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন।
গান্ধী মোড়ে ছোট্ট একটি জুতোর দোকানও তিনি করেছিলেন। রাজনৈতিকভাবে তিনি ছিলেন বাম মনস্ক ব্যক্তিত্ব। পরবর্তীতে তিনি কল্যাণীতে তাঁর বেসরকারি কর্মস্থল সেন পণ্ডিত কারখানা ছেড়ে চলে আসেন এবং ব্যবসায়ে মনোনিবেশ করেন। কাঁচরাপাড়ার ভারত সু দোকানটির প্রতিষ্ঠাতা তিনি। বর্তমানে তাঁর প্রজন্মরা সেই প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে ব্যবসায়ীরা তাঁর পরামর্শ নিয়েছেন।

পরে তিনি নিজে একটি ট্রাস্ট গঠন করেন তাঁর মা এবং বাবার স্মৃতির উদ্দেশ্যে । আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বেশ কয়েকবছর তাদের হাতে পঠন-পাঠন সামগ্রী তুলে দিয়েছেন এবং অন্যান্য সামাজিক কর্মেও তিনি যুক্ত ছিলেন।
কাঁচরাপাড়ায় মৃণাল সিংহরায়ের নেতৃত্বে যে সাংস্কৃতিক এবং ক্রীড়া আন্দোলন গড়ে উঠেছিল সে সময়ে তিনি সেই আন্দোলনে যুক্ত হয়ে পড়েন।
মৃণাল সিংহরায়ের নেতৃত্বে এই অঞ্চলে যে উল্লেখযোগ্য সঙ্গীত অনুষ্ঠান স্পল্ডিং ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়েছিল যে অনুষ্ঠানে শিল্পী হিসাবে বিভিন্ন সময়ে এসেছেন লতা মঙ্গেশকর, আশা ভোঁসলে, রাহুল দেব বর্মন সেই অনুষ্ঠানেরও একজন সংগঠক হিসাবে মৃণাল সিংহরায়ের পাশে ছিলেন তিনি।

ব্যবসায়ীরা কোনো বিষয়ে বিপদগ্রস্ত হলে তিনি তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং মতামত দিয়েছেন। অনেক ব্যবসায়ী জানান, তারা আজ একজন সুযোগ্য নেতা এবং সংগঠককে হারালেন।