অবতক খবর,২৯ জানুয়ারি: উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতের প্যারীচরণ সরকার রাষ্ট্রীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছে জিবিএস-এ আক্রান্ত হয়ে, এমনটাই সন্দেহ করা হচ্ছে।

স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, আমডাঙার টাবাবেরিয়ে গ্রামের বাসিন্দা ওই পড়ুয়া। গত ২২ তারিখ সন্ধ্যায় ঘুম থেকে উঠে মাকে গলা ব্যথার কথা জানিয়েছিল সে। পরিবার বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দেয়নি। ভেবেছিল, ‘ঠান্ডা লেগেছে’! কিন্তু রাতেই জ্বর আসে ছাত্রের। ওষুধও খায়। পরের দিন ঘুম থেকে ওঠার পর আর দু’হাতে জোর পায় না সে।

তৎক্ষণাৎ ছেলেকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান মা। সেখানে চেয়ারে বসে থাকা অবস্থাতেই ছাত্র পড়ে গিয়েছিল বলে জানা যায়। তখনই চিকিৎসকের পরামর্শে তড়িঘড়ি তাকে বারাসত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে শুরু হয় চিকিৎসা। অবস্থার অবনতি হলে এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। তার পর থেকে বেলা যত গড়িয়েছে, শরীর তত অচল হতে শুরু করে পড়ুয়ার। খাওয়ার ক্ষমতাটুকুও ছিল না। শুক্রবার তাঁকে সিসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়। ক্রমাগত অবনতি হতে থাকে শারীরিক পরিস্থিতির। সোমবার সকালে মৃত্যু হয় দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ার।

করোনার পর ফের আতঙ্ক ছড়িয়েছে বিরল স্নায়ুরোগ গুলেইন বারি সিনড্রোম। মহারাষ্ট্রের পুণেতে গত কয়েক দিন ধরেই আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বিরল স্নায়ুরোগ গুলেইন বারি সিন্ড্রোম৷ আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে৷ আক্রান্তদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে ভেন্টিলেশনেও রাখতে হয়েছে৷ জটিল এই রোগে পক্ষাঘাত হয়ে পড়েন আক্রান্তরা, খাওয়া দাওয়ার সমস্যাও দেখা দেয়৷ অনেক ক্ষেত্রে আবার শ্বাসকষ্টের সমস্যাও শুরু হয়৷ মহারাষ্ট্রের সোলাপুরে গুলেইন বারি সিন্ড্রোমে আক্রান্ত এক ব্যক্তির মৃত্যুর খবরও মিলেছে৷ স্বভাবতই গোটা দেশের মতো এ রাজ্যের মানুষের মনেও গুলেইন বারি নিয়ে একই সঙ্গে আতঙ্ক এবং কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে৷ কারণ বড়দের মতো ছোটরাও এই রোগে আক্রান্ত হয়৷

পার্ক সার্কাসের ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথ- এর অধ্যক্ষ এবং বিশিষ্ট শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জয়দেব রায় জানান, ‘মহারাষ্ট্রে এই রোগের প্রভাবের কথা শুনলেও আমাদের রাজ্যে এখনও পর্যন্ত এই রোগ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়া তো দূর অস্ত, বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ারও কিছু নেই। খুব কম মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হন। এই মুহূর্তে আমাদের হাসপাতালে একজন এই জিবি সিনড্রোমে আক্রান্ত শিশু ভর্তি রয়েছে। শিশুটিকে ভেন্টিলেশনে রাখা হলেও অনেকটাই শারীরিক উন্নতি হয়েছে৷ দ্রুত তাকে ভেন্টিলেশন সাপোর্ট থেকে বার করা হবে। আর একজন শিশু জিবি সিনড্রোম সন্দেহে ভর্তি আছে। বছরের প্রত্যেক সময়ই এই গুলেন বেরি সিন্ড্রোম নামক রোগে আক্রান্ত শিশুরা আমাদের হাসপাতালে ভর্তি হয়। এর মধ্যে কোনও নতুনত্ব কিছু নেই।