অবতক খবর,১২ জানুয়ারি,বালুরঘাট: দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট থানার শিবরামপুর সীমান্তে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের টানাপোড়েন যেন নতুন মাত্রা পেল। উন্মুক্ত সীমান্তের ২০০ মিটার এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া বসানোর কাজ শুরু করেছিল বিএসএফ। কিন্তু বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি আচমকাই সেই কাজ বন্ধ করে দেয়। যে ঘটনায় সীমান্তজুড়ে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, বিজিবি সরাসরি দাবি করেছে যে তাদের সরকারের নির্দেশে এই কাজ বন্ধ করা হয়েছে। পঞ্চায়েত সদস্য রবিকান্ত বর্মনের মতে, “বাংলাদেশের পুর্বতন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সঙ্গে ভারতের হওয়া চুক্তি মেনে চলতে এখনকার ইউনুস সরকার অনিচ্ছুক। বিজিবি সেই নীতিরই বাস্তবায়ন করছে। সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের এমন দৃঢ় অবস্থান আগে কখনও দেখা যায়নি।” অন্যদিকে, বিএসএফ তাদের অবস্থান থেকে সরে আসতে নারাজ। তাদের দাবি, কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার কাজ আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন মেনেই করা হচ্ছে।
দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর এই শক্তি প্রদর্শনে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সীমান্ত সংলগ্ন গ্রামগুলোতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় এক প্রবীণ বাসিন্দা মন্মথ বর্মন বলেন, “দুদিন ধরে সীমান্তজুড়ে এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতি চলছে। দুদেশের সেনা জওয়ানদের এতটা কঠোর অবস্থান আগে কখনও দেখা যায়নি। আমরা খুবই উদ্বিগ্ন।”
সীমান্তের উন্মুক্ত অবস্থান বহুদিন ধরেই চোরাচালান ও অপরাধমূলক কার্যকলাপের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। তাই কাঁটাতারের বেড়া সীমান্তবাসীর জন্য ছিল আশার আলো। কিন্তু কাজ বন্ধ হওয়ায় তাঁদের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা আরও বাড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পালাবদলের সঙ্গে এই ঘটনার গভীর সম্পর্ক রয়েছে। পুর্বতন হাসিনা সরকারের নীতি থেকে সরে এসে ইউনুস সরকার দুই দেশের সম্পর্কের নতুন হিসাব কষছে বলে মনে করছেন অনেকে। বিজিবি-র এমন আচরণ দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক চাপ বাড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও বিএসএফ জানিয়ে দিয়েছে, সীমান্ত সুরক্ষার ক্ষেত্রে তারা কোনোভাবেই পিছু হটবে না। অন্যদিকে বিজিবি তাদের সিদ্ধান্তে অটল। পরিস্থিতি দ্রুত সামাল দিতে না পারলে সংঘর্ষের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।