কবি কবিতা ও জেলখানা যখন সমার্থক
তমাল সাহা
অবতকের বিশেষ প্রতিবেদন

নাজিম হিকমত– কবিতা ও জেলখানা বললে মনে পড়ে যাবে তুর্কি কবি নাজিম হিকমতের কথা। কবিতা প্রেমের চিঠি হয়ে উড়ে আসে জানালায়। শুধু মানুষকে ভালোবেসে, মানুষের অধিকারের জন্য এত দীর্ঘ বছর জেল খাটা যায়! তুরস্কের কবি নাজিম। নাজিমের নীল চোখে ওরা বৃথাই খুঁজবে ভয়। বা ইচ্ছে হলেই ছিঁড়ে নেবে মানুষের মুণ্ডুটা, সেটাতো ফুলের বোঁটা নয়!– এমন সব স্পর্ধিত
উচ্চারণ করতে পারেন যিনি তিনিই তো জনতার কবি। আঠাশ বছরের জন্য তার কয়েদি জীবন ঘোষণা করে দিয়েছিল তুরস্ক রাষ্ট্র। ভালোই হলো কবি পেয়ে গেলেন লেখার অবসর। আমরা পেয়ে গেলাম জেলখানায় বসে লেখা তার অপূর্ব অভূতপূর্ব কবিতা। এই কবির মুক্তির জন্য আন্তর্জাতিক কমিটি গঠন করেন পাবলো নেরুদা, পল রবসন এবং জাঁ-পল সার্ত্রে। কবি সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মী হতে পারেন। তার অন্যায় অপরাধ– সেনাবাহিনীতে সমাজতান্ত্রিক অনুপ্রেরণা জোগানোর দুঃসাহসিক কাজটি করেছিলেন কলম হাতে এই কবি!
তিনি জেলখানার প্রেমে পড়েছিলেন, না জেলখানা তার প্রেমে পড়েছিল আমি জানিনা। সেই জেলখানার কবি নাজিম হিকমত জন্মেছিলেন ১৫ জানুয়ারি। ৩ মে তাঁর প্রয়াণ দিবস। তাঁকে শ্রদ্ধা

জেলখানার কবি

কলম হাতে নিলেও
জেলখানা হয় বাড়ি।
কেননা কলম
অস্ত্রের চেয়েও ভারি।

ক-এ কলম
ক-এ কবিতা
ক-এ কারাগার
নাজিম বলেছিল,
এই তিনটি শব্দ আমার।

নাজিম বলেছিল,
ওরা আমার নীল চোখে
বৃথাই খুঁজবে ভয়।
কবির আদর্শ যেন
এমনই হয়।

জানতে চেয়েছিলাম,
ওরা কারা?
সে বলে, তুচ্ছ রাষ্ট্র!
ক্ষমতা দেখায় যারা।

নাজিম বলেছিল,
ইচ্ছে করলেই ছেঁড়া যায়না
স্কন্ধ থেকে শির।
কবিদেরও গড়ে তুলতে হয়
কলম শিবির।
রাষ্ট্র যখন
তোমাকে করবে অবরুদ্ধ
মনে রেখো,
কবিতা লেখাটাই একটা যুদ্ধ।