আজ এই কবির জন্মদিন। হায়,যদি মনে পড়ে যায়!
এসব পুরোনো সেকেলে কবি! দেখুন , তাদের চোখ কেমন মুক্ত ছিল। এদের কবিতা বইয়ে পাঠ্য ছিল।
যতীন্দ্র মোহন বাগচীর জন্মদিন আজ।

কবির গেরস্তালি
তমাল সাহা

বাঁশ বাগানের মাথার উপর চাঁদ
সৌন্দর্য ছড়াতে গিয়ে বিষণ্ণ হয়ে পড়ে
শব্দের বিনম্র হাহাকারে
জোনাকিরা নিভু নিভু জ্বলে
ভাসতে থাকে শোলোক-বলা কাজলা দিদির মুখ।
অন্ধ বধূর হৃদয়দ্রাবী বেদনার আত্মকথনে নৈশব্দ্যের শোক বেজে ওঠে
তার মধ্যে তুমি শব্দ সাজিয়ে বলে ওঠো
ওই যে গাঁ-টি যাচ্ছে দেখা আইরি ক্ষেতের আড়ে–
একটা মায়াময় মোহময়তা ছড়িয়ে পড়ে
তোমার শাব্দিক কারুকাজে।

পল্লীর কবি প্রকৃতির কবি
এমন অভিধায় কারা তোমাকে বাঁধতে চায়?
আমি তো দেখি মানুষের জন্য জেগে আছো তুমি বিনিদ্র পাহারায়!
বে-নামায় কোন সমাজচিত্র, কোন নষ্টামি তুলে ধরে আমাদের দেখাও
স্বৈরিণী নিজেকে সাজিয়ে রূপাজীবী পণ্য হয়ে ওঠে এই পরিবেশে
সেই কাহিনীও তুমি শোনাও।

এতো সহজে চাষার ঘরে মাটির মানুষের সাথে মিশে যায় কোন কবি?
খড়ের বুঁদিতে মাথা রেখে শুয়ে পড়ে একখানি কাঁথা গায়ে
জানতে চায় চাষির জীবন– ঘর-গেরস্তালি
চিঁড়ে কোটার গন্ধ খুঁজে পায়,
শুনতে পায় ঢেকির শব্দ,
কান পেতে শোনে চাষির কর্জের জীবন।
তোমার বর্ণিল ঘ্রাণে মাটির ধান
আজও গেয়ে ওঠে নবান্নের গান।

আর কি বলো তুমি!
বিশ্বপিতার মহা-কারবার এই দিন দুনিয়াটা
মানুষই তাহার মহা-মূলধন, কর্ম তাহার খাটা।
তোমার সহজ উচ্চারণ বারবার
শুধু মনে পড়ে,
পায়ের তলার ধুলো, সেও, যদি কেউ পদাঘাত করে
নিমেষে তাহার প্রতিশোধ লয় চড়ি’ শিরোপরে।

এইসব বাংলার কবি আজও বেঁচে আছে
শিখি আর শিখি
কি লিখতে হবে, কতদূর যেতে হবে, কাদের কাছে।