ঐশ্বর্য হে!
তমাল সাহা
একটা লোক তার
তেমন কোনো চালচুলো নেই
ঘরও শূন্য, ফাঁকা।
একাকিত্বের মধ্যে সে বাস করে।
এই ভবের হাটে সে দোকান পেতে আছে কাগজ আর কলম নিয়ে।
লোকটা এদিক-ওদিক ঘুরে বেড়ায়…
ঈশ্বর মানে না তবুও
সতীমার মেলায় যায়, কৃষ্ণ রাইজির রথের মেলায় যায়, কেন্দুলির মেলায় যায়, ঝুলন মেলায় যায়।
লোকটি ধর্ম মানে না
আবার ধর্ম মানেও একটা।
লোকটিকে জিগ্যেস করি,
কী সেই ধর্ম?
সে বলে,
আমার যাপিত জীবনের দিকে
লক্ষ্য রাখলে তা তুমি বুঝতে পারবে।
ধর্মকে আমি বিশ্বাস করি, যা ধারণ করে, সেটাই হচ্ছে ধর্ম।
বলোতো কী বা কাকে ধারণ করে?
লোকটার কাছে গ্রীষ্ম গ্রীষ্ম নয়
বর্ষার বারিপাত কিছুই নয়
শরতের সৌন্দর্য শরতের মতোই
শীত এলে সে কুঁকড়ে থাকে না
হেমন্তের ঝরাপাতা সে দেখে কিন্তু
নিজে ঝরতে চায় না।
লোকটা বসন্তের ওই যে আকাশ ছোঁওয়া, ছড়িয়ে পড়া লাল ফুলের সমাহার,
তা উন্মনা হয়ে দেখে।
লোকটির টাকা-কড়ি তেমন না থাকলেও
ঈশ্বরের দিকে ঝোঁক তেমন
না থাকলেও
তার একটা ঐশ্বর্য রয়েছে।
কী সেই ঐশ্বর্য?
সে বলে, খুঁজে বার করো।
এই ঐশ্বর্য সকলেই খুঁজে পেতে চায়
এর পেছনে সৃষ্টির আবহমান কাল থেকে মানুষ দৌড়চ্ছে
সেটি কি?
একটি প্রিয় নারীর মুখ,
প্রকৃতির মতো সহজ,সরল, সুন্দর!
সে মুখ অবশ্য দেখা যায় না
অস্তিত্বের মধ্যে অনস্তিত্বের ব্যঞ্জনা
সে মুখ অনুভবের—
তার অন্য নাম ভালোবাসা
অদৃশ্যময়তায় ছড়িয়ে পড়াই
তার স্বভাব ধর্ম!
মানুষ খুব নিঃস্ব হয়ে আছে
তুমি তাকে দেবে ভালোবাসা!