অবতক খবর, ৬ জানুয়ারি: একদিকে কেন্দ্র সরকার যখন দেশের বিজ্ঞান চেতনাকে স্তব্ধ করে দিতে চাইছে, তখন রাজ্যের শাসকদলের কর্মসূচিতে প্রাধান্য পাচ্ছে ছাত্রছাত্রীর মধ্যে বিজ্ঞানমনস্কতা ও সুস্থ সংস্কৃতি বিকাশের প্রসার। সম্প্রতি 110 বছরের ঐতিহ্যবাহী “জাতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেস” বন্ধ হয়ে গেল। কয়েক মাস আগেই পাকাপাকি ভাবে বন্ধ হয়ে গেছে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের অধীন “বিজ্ঞান প্রসার”।

এবারই প্রথম এই জাতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের কোনও অধিবেশন হচ্ছে না। এই আবহে রাজ্য সরকার ও শাসকদলের উদ্যোগে রাজ্য জুড়ে ছাত্রছাত্রীদের প্রতিভার খোঁজ চলছে। সম্প্রতি, রাজ্যের খুদে বিজ্ঞানী চুঁচুড়ার অভিজ্ঞান কিশোর দাসকে সংবর্ধনা দিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। গত মঙ্গলবার নৈহাটি ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র কলেজের বার্ষিক ‘ট্যালেন্ট হান্ট’ অনুষ্ঠানে। অভিজ্ঞানের হাতে সংবর্ধনা তুলে দেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য। তৃণাঙ্কুর জানান – “মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় এই উৎসবমশুমে সারা রাজ্যজুড়ে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে সুস্থ সংস্কৃতি ও বিজ্ঞানমনস্কতা প্রসারে আমরা ব্রতী হয়েছি। সেই উপলক্ষে আরবিসি কলেজে অনুষ্ঠিত হয়েছিল ‘মেধার খোঁজ’ প্রতিযোগিতা। “এল ট্যালেন্টো” নামে। সারা রাজ্য থেকে হাজারেরও বেশি ছাত্র-ছাত্রী যোগদান করে। তাদের মধ্যে সেরা বাছাই করে আমরা পুরস্কৃত করেছি”।

সপ্তাহব্যাপী চলা এই অনুষ্ঠানের গ্রান্ডফিনালে তে দশহাজারেরও মানুষের উপস্থিতিতে আলাদা করে সংবর্ধিত করা হয় চুঁচুড়ার খুদে বিজ্ঞানী অভিজ্ঞানকে। বিশিষ্ট গুণীজনদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক, বিধায়ক তথা অভিনেতা চিরঞ্জিত চক্রবর্তী প্রমূখ। হুগলি কলেজিয়েট স্কুলের একাদশ শ্রেণীর অভিজ্ঞান একাধিকবার সংবাদ শিরোনামে এসেছে। বিজ্ঞান ভিত্তিক উদ্ভাবন ও চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য। গত অক্টোবরে কেন্দ্রীয় সরকারের শিল্পবাণিজ্য মন্ত্রক তার হাতে তুলে দিয়েছে “ন্যাশনাল ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি আওয়ার্ড”। তার যুগান্তকারী একাধিক উদ্ভাবনের জন্য। করোনা মহামারীর সময় তাঁর অবিস্কৃত “স্পর্শহীন ও গ্রহণযোগ্য স্যানিটাইজিং সিস্টেম” নজর কেড়েছিল দেশের তাবড় তাবড় বিজ্ঞানীদের। নীতি আয়োগের তৎকালীন ভাইস চেয়ারম্যান রাজীব কুমার নিজে প্রশংসা করেছিলেন অভিজ্ঞানের। মন্ত্রক সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় মেধা সম্পদ পুরস্কার প্রাপকদের তালিকায় অভিজ্ঞানই কনিষ্ঠতম এবং ব্যক্তিগত স্তরে প্রথম বাঙালি আবিষ্কারক। এই প্রসঙ্গে তৃনাঙ্কুর জানায় – “অভিজ্ঞান প্রমাণ করল যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি চর্চায় আমাদের রাজ্যের ছাত্র-ছাত্রীরা বরাবরই দেশের সেরা। এমনকি বিজ্ঞান ক্ষেত্রে দেশের সেরা ‘ভাটনগর পুরস্কার’ প্রাপকদের তালিকায় সবার উপরে আছে বাঙালি বিজ্ঞানীদের সংখ্যা। আমরা এই মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের উৎসাহিত করে তাদের পাশে থাকতে চাই। এটাই শিখিয়েছেন আমাদের নেত্রী ও মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়।”