এবার বড়দিনের প্রার্থনা
তমাল সাহা
সতীত্বের পরীক্ষা দিয়েছিল সীতা।অগ্নিকুণ্ডের ভিতর দাঁড়িয়ে অগ্নির লেলিহান জিহ্বা গ্রাস করতে থাকে তাকে।
লাঙলের ফলায় বিদ্ধ হয়ে মৃত্তিকা থেকে জন্ম হয়েছিল তার।তবুও তাকে পরীক্ষা দিতে হয়এই পৃথিবীতে দাঁড়িয়ে এই মাটির উপর।
যাজ্ঞসেনী তো যজ্ঞ থেকে সম্ভূতা হয়েছিল।
প্রকাশ্য রাজসভায় তাকে দীর্ঘ পরীক্ষা দিতে হয় নারীত্বের। পাশার দানপর্ব সেই কবে থেকে চলে আসছে।
ক্ষমতা! ক্ষমতা! ক্ষমতা! এই রামায়ণ মহাভারত আমাদের মহাকাব্য। বিশ্ব ইতিহাস হয়ে ওঠে।
তুষার বা অগ্নিযুগ আসছে বোধ করি। এইবারই আমাদের শেষতম বড়দিন কিনা জানা নেই। কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারীকা, কচ্ছ কাথিয়াওয়াড় থেকে বঙ্গোপসাগর জুড়ে এক ভয়ানক ভয়ের আগ্রাসনের দীর্ঘ হাত দৃশ্যমান।
আমাদের নাগরিকত্বের পরীক্ষা দিতে হবে মৃত্তিকা কন্যার মতো যেমন সে দিয়েছিল সতীত্বের পরীক্ষা। আমাদের পরীক্ষা দিতে হবে যাজ্ঞসেনীর মতো– আমরা এ পৃথিবীর মানুষ কিনা যাজ্ঞসেনী যেভাবে পরীক্ষা দিয়েছিল ইজ্জতের।
হে ক্রিসমাস পিতা সান্তাক্লজ!
এবার বড়দিনের রাতে আমাদের একটি প্রার্থনা শোনো। তোমার স্লেজগাড়ির চাকাগুলোকে আরও দ্রুতিময় করে তোলো। আর বল্গাহরিণগুলোকে করে তোলো বেগবান। আমরা তোমার কাছে দস্তানা ভর্তি চকোলেট, লজেন্স চাইনা, চাইনা ব্যাগভর্তি খেলনা উপহার!
হে পিতা, সেন্ট নিকোলাস! তুমি আমাদের রক্ষা করো! আমাদের নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য পুরানো দলিলপত্র- দস্তাবেজ যা রেখে গিয়েছে আমাদের পিতৃপুরুষেরা, প্রপিতামহেরা সেইসব প্রমাণসমূহ তোমার কারখানায় কর্মরত অসংখ্য ঐন্দ্রজালিক ক্ষমতাসম্পন্ন এলেফদের হাত দিয়ে পাঠাও।
হে সান্তা! নয়টি উড়ন্ত বল্গাহরিণের স্লেজগাড়ি নিয়ে তুমি আমাদের কাছে দ্রুত চলে এসো। অনেক কেক,মিষ্টি, মন্ডা, লজেন্স ক্রিসমাস ট্রির বর্ণিল সজ্জা আমাদের উপহার দিয়েছ। আমরা আর এসব কিছুই চাই না।
তুমি এবার আমাদের পাশে এসে দাঁড়াও। তিমির রাত্রিতে শৈত্যপ্রবাহকে নাচিয়ে তুমি এসো। দেখি তোমার হাসি মুখ, স্থূল দেহখানি। দেখি শ্বেতশুভ্র শ্মশ্রু, সাদা কলার কাফযুক্ত লাল কোট, সাদা কাফওয়ালা লাল ট্রাউজার্স। মাথার শিরোপা লাল টুকটুকে টুপিটি। কালো চামড়া বেল্ট ও বুট জুতো।
আর সেই মহান বিশাল থলেটি থেকে তুমি বার করো এক একটি প্রমাণ যাতে রয়েছে আমাদের এক একটি তথ্য, যাতে রয়েছে আমাদের নাগরিকত্বের প্রমাণ যাতে লেগে আছে আমার পূর্বপুরুষের হাতের স্পর্শ।
সান্তা ক্লজ! তুমি প্রমাণ দাও তুমি সত্যিই আমাদের ভালোবাসো।