এই বাংলার উপকূল থেকে উড়ে চলে গেল আরেকটি গানের পাখি নির্মলা মিশ্র

এই বাংলার উপকূল থেকে উড়ে চলে গেল আরেকটি গানের পাখি নির্মলা মিশ্র। মাটিতে এসে নেমেছিলেন ৩০ সেপ্টেম্বর ১৯৮৩ আবার উড়তে উড়তে চলে গেলেন নীল আকাশের দিকে ৩০ জুলাই ১৯২২।

গাঙ্গেয় উপত্যকায় এই মধ্যবিত্ত জীবনযাপিত মানুষেরা তার কন্ঠ শোনেনি এমন তো নয়, শহরতলির এই ছোট্ট জনপদ কাঁচরাপাড়ায় সে এসেছে বারবার। তখন গানের অনুষ্ঠান, ওমুক নাইট, তমুক নাইট– এসব শব্দ পরিচিতি পায়নি। তখন তাকে ইংরেজিতে বলা হত ফাংশান, আর বাংলায় বলা হত জলসা। ১৯৬২,৬৩,৬৪,৬৫ কাঁচরাপাড়ার জগত এক গানের জগত। রাজনৈতিক মস্তানির দোলাচলে নাস্তানাবুদ পরিবেশ তখন ছিল না। মানুষ অনেক সংগীতপ্রিয় ছিল, বাংলা গান অনেক মর্যাদা পেয়েছিল।

শারদোৎসব, দীপাবলীর উৎসবে তখন গানের অনুষ্ঠান হতো নিয়মিত।

সেই ১৯৬২ সালে নির্মলা মিশ্র তখন এই জনপদে গানের আসরে আসেন।শ্রীলক্ষ্মী সিনেমার বিপরীতে উন্মুক্ত অঞ্চলে অশোক সংঘের অনুষ্ঠানে। পরবর্তীতে এই জনপদে তিনি আরো কয়েকবার এসেছেন। আরপি স্কুলের মাঠে আবু্র আয়োজনে জলসায় তিনি গেয়েছিলেন সেই জনপ্রিয় গানটি– এমন একটি ঝিনুক খুঁজে পেলাম না।তার আগে তো পরপর অনেক গানই গেয়েছিলেন কিন্তু তখন আকাশ বাতাস মথিত হয়েছিল এই গানেটিতেই— এমন একটি ঝিনুক খুঁজে পেলাম না যাতে মুক্তো আছে, এমন একটি মানুষ খুঁজে পেলাম না যার মন আছে।

কথাকার পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়, সুরকার নচিকেতা ঘোষকে ছাপিয়ে গায়কির ধ্রুপদীতে মানুষের হৃদয় জয় করে নিয়েছিল সে..

সেই মানুষের খোঁজ এখনো চলছে….

ঝিনুকের ভেতর মুক্তো ছিল

তমাল সাহা

 

তুমি তো গানের সুরে বলেছিলে

ছোট্ট সে কথা, ভালোবাসা।

অথচ সঙ্গে জুড়ে দাও

সেই একজন তাকে দিও না মন,সে কথা দিয়ে চলে যাবে এখন।

আর বলো, আমার বলার কিছু ছিল না।

সত্যিই কি ছিল না? তবে কেন বলো,

দূরে আকাশ কাছে তুমি….

আমি তো তোমার হাসি কান্নার চিরদিনের সাথী। ‌

বারবার আয়নায় নিজের মুখ দেখো। আর আরশিকে জিজ্ঞেস করো, বলোতো আরশি তুমি মুখটি দেখে

কে রূপসী তোমার চোখে?

আফশোষ তো একটা ছিলই, নাহলে আমাদের শোনাও কেন,

এমন একটি ঝিনুক খুঁজে পেলাম না যাতে মুক্তো আছে। তবুও তো আশা ছিল বুকের কোথাও। তাই গেয়ে ওঠো,

ওরা ঘুমায় আবার জাগে।

বলো, চাঁদ কে নিভিয়ে রাখো…

তোমার আকাশ দুটি চোখের হয়ে গেছি আমি তারা।

কত গভীর অনুভব সোনালী দিন, কত আবেশে!

যাওয়ার আগে যাব না আমি তোমায় না বলে,

আজ কোন কাজ নেই আমার হাতে।

চলো আজ কিছু পথ চলে যাই।

তুমি কি তোতা পাখি হতে চাও, নাহলে কেন বলো ও তোতা পাখি রে আমার মাকে এনে দাও।

শেষ বেলায় আবার সেই দেশে টান, আবার আমি আসিব ফিরে তোমার গানের ছায়ায়, এই বাংলার মাটিতে।

ঝিনুক ছিল, ঝিনুকে মুক্তো ছিল, ছিল উজ্জ্বলতা

গানের পাখি উড়ে চলে যায় মাটিতে এখন আশ্চর্য নীরবতা!