অবতক খবর,২৭ এপ্রিল: হালিশহরের এক পরিচিত নাম রাজু বিশ্বাস। ‌ শুধু দলীয় কর্মী হিসেবে নয় একজন সমাজকর্মী হিসেবেও হালিশহরের মানুষ তাকে চেনেন। তিনি একজন সক্রিয় তৃণমূল কর্মী। ২৩শে মে ২০১৯-এর পর যখন পালাবদল চলছে তখন একমাত্র রাজু বিশ্বাসকেই দেখা যায় দলের জন্য লড়াই করতে। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন কাঁচরাপাড়ার মাটিতে পা রেখেছিলেন তখন একমাত্র তিনি ছিলেন, যে কিনা অসংখ্য কর্মী-সমর্থককে একত্রিত করে সুপ্রিমোর সভায় যোগদান করেছিলেন এবং সভা সফল করিয়েছিলেন। সেই সময় ছিলেন রাজু বিশ্বাস আর আজও একইভাবে দলের পাশে এবং মানুষের পাশে রয়েছেন। এই দুঃসময়ে যখন মানুষের চিন্তায় মাথায় হাত পড়েছে যে তাদের দিন কিভাবে চলবে, কিভাবে বাঁচবেন তারা! ঠিক সেই সময়েও তিনি তাদের পাশে দাঁড়ালেন। লকডাউন শুরু হওয়ার দিন থেকে শুরু করে আজকের তারিখ পর্যন্ত থেমে থাকেনি তার ত্রাণকার্য। ‌ হালিশহরের ১,২,৩, এবং ৪ নং ওয়ার্ডের। অর্থাৎ তিনি মোট ৪টি ওয়ার্ডের দুঃস্থ, অসহায়, পিছিয়ে পড়া মানুষদের মধ্যে ত্রাণ বন্টনের দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি প্রতিদিন নিয়ম করে বাড়ি পিছু কতজন সদস্য রয়েছেন সেই অনুযায়ী চাল,ডাল, মশলাপাতি,সবজি বন্টন করে চলেছেন। শুধু তাই নয়, এই খাদ্য সামগ্রী গুলির সাথে কখনো ডিম, কখনো এঁচোড়, সোয়াবিন সহ অন্যান্য খাদ্যসামগ্রীও বিতরণ করছেন। এছাড়াও শিশুদের জন্য চাউমিন,বিস্কুট,মুড়ি ইত্যাদি এইসব তো রয়েছেই। এই সংবাদ আমরা বিগত দিনেও করেছি। সেই সময়ও তিনি বলেছিলেন, ‘প্রচার দরকার নেই, কাদের ত্রাণ সামগ্রী বন্টন করছি তাদের ছবি দেখানোরও দরকার নেই।’ সেই কথা তিনি আজও বলেছেন। তিনি বলেছেন,’আমার প্রচারের প্রয়োজন নেই। তবে হ্যাঁ, আমার এই কর্মকাণ্ডে অনুপ্রাণিত হয়ে আরও কেউ যদি এই অসহায়,পিছিয়ে পড়া মানুষগুলির সামনে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন এটাই যথেষ্ট। তাতে আরো বেশি মানুষ উপকৃত হবেন এবং সেই কারণেই আমি এই ত্রাণকার্য এখনো পর্যন্ত চালিয়ে যাচ্ছি। ‌কেউ যদি আমার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে অন্তত একদিন মানুষের পাশে দাঁড়ান, তবে সেটাই অনেকটা করা হবে ওই মানুষগুলোর জন্য। এখন সময় মানুষ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর। কারণ এখন গোটা বিশ্ব এলোরে চলেছে এই মারণ ভাইরাসের বিরুদ্ধে। আর এই সময় মানুষ যাতে না খেয়ে না মরেন, অন্তত একবেলা যেন তাদের পেটে ভাত জোটে।’ আর উল্লেখযোগ্যভাবে রাজু বিশ্বাসের এই কর্মকাণ্ডে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তার পাশে দেখা যাচ্ছে তার সহধর্মিনীকে। শুধু তাই নয়, রাজু বিশ্বাসের বন্ধুবান্ধব, পাড়া-প্রতিবেশী তাকে দেখে অনুপ্রাণিত হচ্ছেন এবং তার পাশে এসে দাঁড়াচ্ছেন। আর এই কার্য চলছে হালিশহর ৩ নং ওয়ার্ডে স্থিত তার নিজস্ব ক্লাব নবোদয় সংঘে। সেখানেই যাবতীয় ত্রাণ সামগ্রী মজুত রয়েছে। যাদের প্রয়োজন তারা সেখানে প্রতিদিন যাচ্ছেন এবং খাদ্য সামগ্রী নিয়ে যাচ্ছেন। মাঝে দুদিন অনিবার্য কারণ বশত এলাকাটি বন্ধ ছিল এবং ওই দুই দিন স্বাভাবিকভাবেই ত্রাণকার্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই দুদিনও আচার্য পাড়ার সমস্ত মানুষের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী তিনি বন্টন করেছিলেন। তিনি বলেন যে, তিনি কোন রং,ধর্ম-বর্ণ দেখে এই ত্রাণ বন্টন করছেন না। আর এই দুঃসময়ে সেগুলি দেখলে চলবেও না। সুতরাং পেটে খিদে নিয়ে কোন কিছুর সাথে লড়াই করা যায় না। সেই যুদ্ধ হোক কিংবা মারণ ভাইরাস। তিনি আরো বলেন যে, তার বিশ্বাস অন্তত একবেলা খেয়েও গোটা পৃথিবীর মানুষ মারণ ভাইরাসের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধ জয় খুব শিগগিরই করবে।