উহ‍্যনাম পণ্ডিত, সুকুমার রায়-এর ছদ্মনাম। বাংলা সাহিত্যের অদ্বিতীয় মনীষা।
আজ তাঁর জন্মদিনে শ্রদ্ধা।

উহ্যনাম পন্ডিত
তমাল সাহা

সে বড় মাপের মানুষ ছিল—
এই বাক্য লিখেই
লেখার পরিণতি টানা যায়।
কিন্তু মাপ যে করবেন,
তার ফুট রুল বা তরাজু কোথায়?

সে কে ছিল বড় কথা নয়,
সে কি করেছিল সেটাই বড় কথা।
খেয়াল রসে এমনসব লেখা
সে পরিপাক করেছিল
ঘুরিয়ে দিয়েছিল আমাদের মাথা।

আমাদেরও ক্লাব থাকে,ইনক্লাব।
তারও ক্লাব ছিল ননসেন্স ক্লাব।
আর তার মুখপত্র ছিল সাড়ে বত্রিশ ভাজা।
মনের আধারে লুকিয়ে মজা
কলম ধরত সে সোজা।
আর লিখত
আবোল তাবোল,খাইখাই,
হযবরল,বিদ‍্যেবোঝাই বাবুমশাই,
অবাক জলপান,ঝালাপালা।
লেখা সে সব বড় দিলখোলা!
তার সেইসব ছবি,খুড়োর কল
কে না দেখেছে,পড়েছে বল?
তার হুঁকোমুখো হ‍্যাংলা
শুধু তার নয়, আমাদের বাড়িও বাংলা।

তার মানডে ক্লাব,লোকে বলত ‘মস্তা’।
লেখায় ছিল কৌতুক,ব্যঙ্গের মিশেল—
সে মজাদার এক নয়া রাস্তা।
সমাজ আছে,
থাকবেই তো কত মুখোশপরা ভেক।
রবীন্দ্র, অবনীন্দ্র,অতুল, সুনীতি,কালিদাস
তার কাছের মানুষ অনেক।

গল্প নাটক কবিতায়—
তার অনন‍্য শব্দসাজ, শিল্পীর কারুকাজ
চেতনায় ঋদ্ধ সাহিত্য সমাজ।
মনে পড়ে,
আমরা দিশী পাগলার দল– দেখতে খারাপ,টিকবে কম/ দামটা একটু বেশি,তা হোক না, তাতেই দেশের মঙ্গল।
স্বদেশি আন্দোলনে সে লিখেছিল এই গান।
দেশপ্রেমে উথাল পাথাল,
কত সহজ এই গীতির সম্মান।

সে ছিল শুদ্ধরসের বোম্বাগড়ের রাজা,
মজার ভেতর পুরে দিত মজা।
নিজের ছদ্মনাম রেখেছিল,উহ্যনাম পন্ডিত। বাঙ্গালী কি আত্মঘাতী জাতি?
বিস্মৃত হবে নিজের ঐতিহ্য অতীত?