ঈশ্বর ভিক্ষা করে
তমাল সাহা

ঈশ্বর দেব-দেবীদের আমি স্বচক্ষে দেখেছি অনেক আগেই।
তখন ঈশ্বর দেব-দেবী শব্দগুলোর মানে বুঝতাম না

মানুষই শিব তা আমি বিবেকানন্দ পড়বার অনেক আগেই জেনে গিয়েছি।
কারণ অনেক ছোটবেলাতেই আমি কালী পার্বতী অন্নপূর্ণা লক্ষ্মী রামচন্দ্র শ্রীকৃষ্ণকে দেখে ফেলেছি
তখনো আমি পুরান উপনিষদ রামায়ণ মহাভারত গল্পের মতো করেও পড়িনি
কিন্তু ততদিনে রাধার পরকীয়া প্রেমগান আমার মুখস্থ হয়ে গিয়েছে

শ্রীরামচন্দ্র সীতাকে নিয়ে প্রতি বছরই আমাদের মান্ধারী বাজার পাড়ায় পালাগান গাইতে আসতো এবং রামের মালা সীতার মালা নিলাম করে পয়সা ওঠাতো।
শ্রীকৃষ্ণ রাধা তো বটেই কালীকে নিয়ে আসতো আমাদের ওয়ার্কশপ রোডের হরিসভার চত্বরে।
পরকীয়া ভালোবাসা আমি সেখান থেকেই শিখি

মহেশ্বর তো পার্বতীকে নিয়ে আমাদের বাড়িতে ভিক্ষে করতে আসতো গাজনের সময়।
অমাবস্যা রাতে শ্মশানে না গিয়েও আমি দীর্ঘ জিভ কালীকে দেখেছি খড়্গ হাতে, তার দুহাতে অভয় ও বর মুদ্রা দেখিনি, দেখেছি ভিক্ষা পাত্র

ঈশ্বরের ক্ষমতা প্রচুর।
তারা যা ইচ্ছে তাই হতে পারে, তাদের বহুরূপ।
পুরুষরা নারীর রূপ ধারণ করতে পারে, শ্রীকৃষ্ণ কালী হয়ে যেতে পারে,
পুরুষ শ্রীচৈতন্যদেব মুখে বিড়ি সুখটান দিতে দিতে বুকে তুলোর প্যাড বেঁধে কত সহজেই রাধা হয়ে যায়!
তখন থেকেই আমি স্তনের গল্প জানি

অনেক পরে বুঝেছি ঈশ্বর আসলে মহা ভিক্ষুক পেটের দানাপানির জন্য এই পৃথিবীতেই ঘোরে।
আমি রবীন্দ্রনাথের কাছে ঋণী
আমি এসব জেনেছি ধূলামন্দির দেবতা বিদায় এবং কৃপণ কবিতা পড়ে!