অভিজ্ঞতা বস্তুবাদ অথবা কবিতা
তমাল সাহা

তখন রাত দশটা কুড়ি। আমি নটবর ঘাটে বসে আছি। দেখি জলস্রোত। হরিধ্বনি শুনি। চিতার আগুন দেখি। সঙ্গে সঞ্জু মিঠু আরো কয়েকজন।

ওরা চলে গেছে। একটি টোটো ধরি। টোটো চালককে বলি কবরস্থানে যাবো। কাঁচরাপাড়া কুঞ্জভিলার কাছে।

আমার বয়স হয়েছে। আত্মভরিতা, আত্মপ্রচার বেড়েছে। আমি বলি , আমাকে চেনো?

চিনি তো বটেই।
প্রথমে ইতস্তত করছিল। তারপর বললো, চলুন! আমি বলি, পথে কাউকে পেলে অবশ্যই উঠিয়ে নেবে। ও বলে ঠিক আছে। খুব দ্রুত গতিতে টোটো চালিয়ে আসে।
সে বিনীতভাবে বলে, দাদা এখানে যদি নেমে পড়েন ভালো হয়।
এখানে মানে, কবিগুরু রবীন্দ্রপথে নয়নী মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের মোড়ে। ‌

আমি বলি ঠিক আছে। নেমে পড়ি।
টোটো চালক বলে, কিছু মনে করবেন না। খুব দ্রুত টোটো চালিয়ে এসেছি। আমার ভায়রা ফোন করেছে মানে আমার ছোট শালী তার গর্ভযন্ত্রণা শুরু হয়েছে, প্রসব বেদনায় কাতরাচ্ছে, হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। তাই একটু দ্বিধা করছিলাম। আপনাকে চিনি, কিছু মনে করবেন না।

আমি বলি, এর চেয়ে বড় সৃজনের সংবাদ আর কী আছে! আমি কিছু মনে করছি না ভাই!
আমি তো সংবাদ নিয়ে কাজ করি।
তুমি শুভ সংবাদ দিও।
হায়রে আমার জীবন!এত রাতেও কত কি ঘটে যায়!

এইভাবে পরিক্রমা করে বস্তুবাদ, জীবনের সংজ্ঞার কত কিছু শিখি আমি।
মাথা নত করে থাকি টোটো চালকের কাছে।

রে জীবন! আমার জীবন তো ছোট হয়ে আসে!