অবতক খবর,৯ সেপ্টেম্বর: কাঁচরাপাড়া হার্ণেট ইংলিশ মিডিয়াম হাই স্কুল নিয়ে বিশাল আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে এই শহরাঞ্চলে। দীর্ঘদিন ধরে এই স্কুলের দুর্নীতি নিয়ে আলোচনা চলছে। আজ বর্তমান পরিচালন সমিতির পক্ষ থেকে প্রেস বিবৃতি দেওয়া হয়। এই প্রেস মিটে উপস্থিত থাকেন চেয়ারম্যান সুনীল রায়, প্রেসিডেন্ট খোকন তালুকদার,ভাইস প্রিন্সিপাল এবং অন্যান্য শিক্ষকরা। প্রেস মিট পরিচালনা করেন প্রেসিডেন্ট খোকন তালুকদার। তিনি বলেন যে, স্কুলে কোনো দুর্নীতি হয়নি। ‌কিন্তু প্রিন্সিপাল শ্যামল ব্যানার্জী বেশ কয়েকটি অভিযোগ করেছেন। ১.স্কুলে গ্রুপ – ডি পদে বেআইনি নিয়োগ ২. নতুন বিল্ডিং কন্সট্রাকশন।এ বিষয়ে সমস্ত অভিযোগ তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও জানিয়েছেন।

আজ প্রেস মিটে বর্তমান প্রেসিডেন্ট খোকন তালুকদার বলেন, যদি দুর্নীতি কিছু হয়ে থাকে তবে তিনি যা অভিযোগ করেছেন সেটা তার আমলেই হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত আগের কমিটির লোকজন। তিনি বলেন,আমি ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে পার্থ ভৌমিকের নেতৃত্বে যখন নতুন কমিটি হয়েছে, সেই সময় আমি এই কমিটিতে যুক্ত হয়েছি। আমি আগের এই সমস্ত কোন ব্যাপার জানিনা এবং এর সঙ্গে জড়িত নই। যা হয়েছে সব আগের কমিটির আমলে। তিনি জানান,যে কনস্ট্রাকশনটি হচ্ছিল সেটি আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং নতুন করে প্রিন্সিপাল এবং অ্যাকাউন্ট্যান্ট নিয়োগ করা হবে।

জানা গেছে , এতদিন যাবৎ এই স্কুলে কোন অ্যাকাউন্ট্যান্ট অর্থাৎ হিসাব পত্র সঠিক রাখার কোনো বন্দোবস্তই ছিল না। অদ্ভুতভাবে এই স্কুলটি এতদিন ধরে চলে আসছে। এই বিষয়ে স্কুলের বর্তমান চেয়ারম্যান কালি রায় বলেন, আগের কমিটির আমলেই যা দুর্নীতি হওয়ার হয়েছে। এখন বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা নতুন পদে খোকন তালুকদারকে পেয়েছি,এই দুর্নীতি আমাদের নজরে আসাতে আমরা এ ব্যাপারে জনসাধারণকে জানানোর জন্য এই প্রেস মিট ডেকেছি। এদিকে প্রেসিডেন্ট জানান,স্কুলের ভাইস প্রেসিডেন্ট অলোকময় লাহিড়ী পদত্যাগ করেছেন এমন কোনো লিখিত চিঠি তার কাছে আসেনি।এদিকে বর্তমান যে প্রিন্সিপাল শ্যামল ব্যানার্জী তিনি লিখিতভাবে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন।

এ বিষয়ে রঞ্জিত চৌধুরী, যিনি আগের কমিটির সেক্রেটারি ছিলেন তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন যে, বর্তমান যে চেয়ারম্যান সুনীল রায় (কালি) তিনি দুগ্ধপোষ্য শিশু নন যে তিনি কিছু বোঝেন না। যত সমস্ত কাজ হয়েছে সব চেকেই তিনি স্বাক্ষর করেছেন। আগের প্রিন্সিপাল প্রয়াত হওয়ার পরও সেই অ্যাকাউন্ট চালু রেখেছেন তিনি এবং এই সুনীল রায় নিজ দায়িত্বে সেই চেক সই করেছেন। তিনি জানান, স্কুলের যত চেক তিনিই সই করেছেন। তিনি কিছু জানেন না তিনি ধোয়া তুলসী পাতা একথা বললে তো আর হবে না। আমি কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরি করে ছোট্ট বাড়ি করেছি  আর উনি বিশাল ফ্লাট কিনে ফেলেছেন।
আর সেই সময়ে যে রিক্রুটমেন্ট হয়েছে সেখানে নিশ্চিতভাবে স্বজনপোষণ হয়েছে। অলোকময় লাহিড়ী নিজের মেয়েকে কাজে ঢুকিয়ছছেন, আত্মীয়কে ঢুকিয়েছেন এবং এই কালী রায় নিজের আত্মীয়-স্বজনকে ঢুকিয়েছেন। খোকন তালুকদারও নিজের পরিচিতদের ঢুকিয়েছেন। আমি মাত্র আড়াই বছর ছিলাম, আমার সময় তো এরকম অভিযোগ কেউ তোলেনি। আমি কোন বিষয়ে অভিযোগ করলে সেই সময় আমাকে চুপ করিয়ে দেওয়া হত। এই স্কুলের কমিটিতে প্রথম থেকেই রয়েছেন সুনীল রায়, আলোকময় লাহিড়ী। তারা তখন এই সমস্ত বিষয়ে কেন অভিযোগ দায়ের করেননি কেন? যেহেতু এখন দুর্নীতির কথা উঠছে তাহলে তারা আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কেন? এই টেন্ডার তপন দেবনাথকে দেওয়া হয়েছে। কিভাবে দেওয়া হলো? আসলে এটা বেনামে খোকন তালুকদারের ভাই অমল তালুকদার করেন। এমন অভিযোগ তিনি করছেন রঞ্জিত চৌধুরী।